অবশেষে রংপুরে ছাত্রীকে গণধর্ষণের এএসআই রাহেনুল গ্রেফতার, আজাদ ও বাবুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

রংপুর প্রতিনিধি: গণধর্ষণের শিকার রংপুরের হারাগাছের ময়নাকুঠি কুচুটারী এলাকার দশম শ্রেণীর ছাত্রীর আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের পর অবশেষে প্রধান অভিযুক্ত রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রাহেনুল ইসলাম ওরফে রাজুকে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় গ্রেফতার দেখিয়েছে তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তাকে পুলিশ লাইন থেকে পিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে।
অন্যদিকে গ্রেফতার আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেন গনধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল বুধবার রংপুর জিডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারাগাছ আমলি আদালতের বিচার পৃথক পৃথকভাবে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
রাত ৭টায় আদালতের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের রংপুর জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, নির্যাতিতা ওই ছাত্রী আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে সে রাজু নামের এক পুলিশ সদস্যের কথা বলেছে। ওই রাজুই হচ্ছে মেট্রো ডিবি পুলিশের এএসআই রাহেনুল ইসলাম। তিনি এই মামলার ২ নং এজাহারভুক্ত আসামি। রোববার রাতে মামলার পরপরই রাহেনুলকে আটক করে পুলিশ লাইনে হেফাজতে রাখে মেট্রোপলিটন পুলিশ। আমরা তাকে সেখান থেকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আমাদের হেফাজতে নিবো।
তিনি বলেন, অপর দুই আসামী আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়াও কারাগারে থাকে সুমাইয়া পারভীন মেঘলা ও সম্পা এই গণধর্ষণের ঘটনায় সহযোগী আসামি। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা নিবিড় তদন্ত করছি। এজন্য প্রযুক্তি ছাড়াও প্রমাণযোগ্য যা যা প্রয়োজন তা আমাদের কাছে অলরেডি এসে গেছে। আরো তদন্ত করছি।
রংপুর মেট্রোপলিটন আদালতের ইন্সপেক্টর নাজমুল কাদের জানিয়েছেন,
গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটে নির্যাতিতা ওই নারীকে কড়া পুলিশি পাহারায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে তার ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও গ্রেফতার অপর দুই আসামি বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদকে ৪টা ১০ মিনিটে একই জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুমাইয়া পারভীন মেঘলা ও সম্পা বেগমকে আদালতে হাজির করা হলে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ নিয়ে এই মামলায় চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
পুলিশ, মামলা ও পারিবারিক সূত্র জানায়, গত রোববার সকালে পূর্ব সম্পর্কের সূত্র ধরে রংপুর মেট্রোপলিটন ডিবির এসএসআই রাহেনুল ইসলাম ওরফে রাজু (৩৫) নগরীর হারাগাছা থানাধীন ময়নাকুঠি কচুটারী এলাকার আয়নালের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যাকে ডেকে নিয়ে এসে ক্যাদারের পুল এলাকার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়ার রুমে নিজে ধর্ষণ করার পর আরো কয়েক যুবককে দিয়ে ধর্ষণ করায়। এ ঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় ওই ছাত্রীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এঘটনায় সুমাইয়া পারভীন মেঘলা (২২) ও অপর সহযোগী সম্পা বেগমকে ঘটনার দিন গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তর হওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় ওই দুই গ্রেফতার নারীকে পিবিআইয়ে হস্তান্তর করে পুলিশ।
 এছাড়াও গত সোমবার ঘটনার ২ নম্বর আসামী মেট্রোডিবি পুলিশের এসএসআই (পূর্বে হারাগাছ থানায় কর্মরত) রাহেনুল ইসলাম রাজুকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার পর আটক করে পুলিশ লাইনে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এছাড়াও গত সোমবার রাতে পিবিআই অভিযান চালিয়ে আরো দুইজনকে গ্রেফতার করে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর প্রতিনিধি এস এম রাফাত হোসেন বাঁধন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.